
পূর্ববর্তী বাংলাদেশি ক্রিকেটার তামিম ইকবাল একটি চমকপ্রদ হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং একটি এঞ্জিওপ্লাস্টি করা হয়। তামিম ইকবাল, বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ওপেনার এবং প্রাক্তন অধিনায়ক, ঢাকা শহরে একটি টি-২০ ম্যাচ খেলাকালে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থা এখন উন্নতির দিকে। চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেছেন যে, তামিম তার হৃদপিণ্ডের একটি শিরার ব্লকেজ দূর করতে সফলভাবে একটি এঞ্জিওগ্রাম সার্জারি সম্পন্ন করেছেন। সার্জারির পর, তামিম হাঁটাও শুরু করেছেন।
তবে, চিকিৎসকরা রিপোর্ট করেছেন যে, আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা তামিমের দীর্ঘমেয়াদী সুস্থতার জন্য এখনও “গুরুত্বপূর্ণ” এবং তাকে কোন প্রকার খেলাধুলা থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন। তামিম মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের একটি ম্যাচ খেলছিলেন, সেই সময়ে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। চমকপ্রদ এই ঘটনার পর, তাকে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তাকে জরুরি চিকিৎসা দেওয়া হয়।
৩৬ বছর বয়সী তামিম ইকবাল সম্প্রতি তার শিরার ব্লকেজ দূর করতে একটি এঞ্জিওপ্লাস্টি এবং এঞ্জিওগ্রাম করিয়েছেন। চিকিৎসকদের দ্রুত সিদ্ধান্ত ও সঠিক চিকিৎসার ফলে এখন তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন। তামিম বর্তমানে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার পথে আছেন এবং তার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো মনে হচ্ছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের পর তামিমের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে এবং তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। যদিও তিনি এখন বিপদমুক্ত বলে মনে করা হচ্ছে, তবুও তার স্বাস্থ্যের ওপর কঠোর নজরদারি রাখা হচ্ছে। চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন, পরবর্তী কয়েক সপ্তাহ তামিমকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে এবং অতিরিক্ত পরিশ্রম থেকে বিরত থাকতে হবে।
তামিম ইকবাল তার শুভাকাঙ্ক্ষী ও সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং তাদের দোয়া ও সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন যে জীবন অনিশ্চিত এবং সুস্থ থাকাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যতে স্বাভাবিক জীবন ও খেলায় ফিরতে তিনি ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছেন এবং চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছেন।
তামিমের শারীরিক অবস্থার উন্নতি
তামিমের শারীরিক অবস্থা উন্নতি পাচ্ছে, এবং তিনি একটু হাঁটতে শুরু করেছেন। তবে পরবর্তী 48 থেকে 72 ঘণ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাকে কমপক্ষে তিন মাস অপেক্ষা করতে হবে স্বাভাবিক কার্যকলাপ, বিশেষ করে খেলা শুরু করার আগে,” বলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর আবু জাফর, ক্রিকবাজের প্রতিবেদনের মতে।
মঙ্গলবার সকালে তামিমের উপর একটি ইকোকার্ডিওগ্রাম পরীক্ষা করা হয়, যা আশাব্যঞ্জক সাইন দেখিয়েছে, জানালেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর আবদুল ওয়াদুদ।
“তামিমের অবস্থা উন্নতি করলেও, হঠাৎ অবনতি হতে পারে, তা অস্বীকার করা যাবে না। তাই অতিরিক্ত পরিশ্রম এড়ানো এবং কঠোর পর্যবেক্ষণ রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ,” বলেন ওয়াদুদ।
“তামিম ইকবালের হৃদপিণ্ডের কার্যকারিতা আপাতদৃষ্টিতে স্বাভাবিক মনে হচ্ছে, তবে এখনো সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরি। চিকিৎসকদের মতে, তার হৃদযন্ত্রে অনিয়মিত স্পন্দনের ঝুঁকি এখনো রয়ে গেছে। এ কারণে তামিমের অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম বা হঠাৎ চলাফেরা করা উচিত নয়। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা তাকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন এবং সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের আওতায় রাখার কথা বলেছেন, যাতে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকে এবং কোনো জটিলতা তৈরি না হয়।
এদিকে, তামিম ইকবালের পরিবার তার চিকিৎসার পরবর্তী ধাপ নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে এবং তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। তার সুস্থতার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পরিবার ঘনিষ্ঠভাবে চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে এবং সর্বোত্তম চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
তামিমের সুস্থতা নিয়ে তার ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীরাও উদ্বিগ্ন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করে অসংখ্য শুভেচ্ছা বার্তা এসেছে। তামিম নিজেও তার সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং তাদের কাছে দোয়া চেয়েছেন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পুরোপুরি সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে তামিমকে এখনো কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে। ধাপে ধাপে তার পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালিত হবে এবং তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তামিম ইকবাল তার সমর্থক এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
“আমরা হৃদস্পন্দনে বেঁচে থাকি, কিন্তু এই হৃদস্পন্দন কোনো ঘোষণা ছাড়াই থেমে যেতে পারে এবং আমরা তা প্রায়ই ভুলে যাই। গতকাল আমার কার্যক্রম শুরু করার আগে কি জানতাম যে আমার সাথে কী হতে যাচ্ছে?” তামিম তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বলেছেন।
“কিছু ঘটনা আমাদের বাস্তবতা উপলব্ধি করতে সাহায্য করে এবং কত ছোট আমাদের এই জীবন, এবং এই ছোট জীবনে আমরা যা করতে পারি বা পারি না, সবাইকে সবাইয়ের পাশে দাঁড়াতে হবে এবং এটিই আমার ছোট অনুরোধ। আমি সবার ভালোবাসার জন্য অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। সবাই আমাকে এবং আমার পরিবারকে আপনার প্রার্থনায় রাখবেন, কারণ আপনার ভালোবাসা ছাড়া তামিম ইকবাল কিছুই না,” তামিম আরও যোগ করেন।