Sheldon Jackson: ভারতীয় ক্রিকেটে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় আছেন যারা কখনও অভিষেকের সুযোগ পাননি।
Sheldon Jackson: ভারতে ক্রিকেটকে ধর্মের মতো পূজা করা হয়, কিন্তু জাতীয় দলে পৌঁছানোর পথ অত্যন্ত কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং। বিশ্বের সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক ঘরোয়া ক্রিকেট কাঠামো থাকা সত্ত্বেও, অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় তাদের আন্তর্জাতিক অভিষেকের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। নির্বাচকরা প্রায়শই জাতীয় নির্বাচনের মূল ভিত্তি হিসাবে ঘরোয়া পারফরম্যান্সকে উল্লেখ করেন, কিন্তু বাস্তবে প্রতিটি প্রতিশ্রুতিশীল খেলোয়াড় তার প্রাপ্য পান না। অনেক খেলোয়াড় রঞ্জি ট্রফি এবং দলীপ ট্রফির মতো টুর্নামেন্টে বছরের পর বছর দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন, তবুও তারা ভারতীয় দলে জায়গা পাননি।
Table of Contents
Sheldon Jackson: শেলডন জ্যাকসন
Sheldon Jackson: ৩৮ বছর বয়সী শেলডন জ্যাকসন, যিনি ২০২৫ সালের গোড়ার দিকে অবসর ঘোষণা করেছিলেন, তিনি সেই খেলোয়াড়দের মধ্যে একজন যারা ধারাবাহিকভাবে ভালো পারফর্ম করার পরেও ভারতীয় দলে সুযোগ পাননি। গুজরাটের ভাবনগরে জন্মগ্রহণকারী এবং মুম্বাইয়ের জুনিয়র সার্কিটে খেলে, জ্যাকসন ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজের জায়গা করে নেন। রঞ্জি ট্রফি এবং দুলীপ ট্রফিতে তিনি সৌরাষ্ট্রের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান ছিলেন। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে তিনি ৪৫.৮০ গড়ে ৭,০০০ এরও বেশি রান করেছেন, যার মধ্যে ২১টি সেঞ্চুরি রয়েছে, কিন্তু ভারতীয় দলে কখনও ডাক পাননি।
Sheldon Jackson: জ্যাকসনের বড় সাফল্য আসে ২০১২-১৩ রঞ্জি মরশুমে, যখন তিনি কোয়ার্টার ফাইনাল এবং সেমিফাইনালে টানা সেঞ্চুরি করে সৌরাষ্ট্রকে প্রথমবারের মতো ফাইনালে নিয়ে যান। এই পারফরম্যান্স তাকে ইন্ডিয়া এ এবং আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরে জায়গা করে দেয়।
Sheldon Jackson: তবে, তিনি আইপিএলে তার ঘরোয়া ফর্মটি পুনরাবৃত্তি করতে পারেননি। উইকেটকিপিং এবং দুর্দান্ত ফিল্ডিং দিয়ে জ্যাকসন এক দশক ধরে সৌরাষ্ট্রের ব্যাটিংকে টেকসই করেছিলেন। ২০১৬ সালে, ইরানি কাপে তিনি রেস্ট অফ ইন্ডিয়ার ঐতিহাসিক জয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তবুও, ২০২৪-২৫ রঞ্জি কোয়ার্টার ফাইনালে সৌরাষ্ট্রের পরাজয়ের পর জ্যাকসন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট না খেলেই অবসর নেন।
জলজ সাক্সেনা
জলজ সাক্সেনা হলেন সেইসব ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে একজন যারা জাতীয় দলে জায়গা করে নেওয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু কখনও আন্তর্জাতিক অভিষেকের সুযোগ পাননি। ২০২২-২৩ রঞ্জি ট্রফিতে সর্বাধিক উইকেট নেওয়া সহ ধারাবাহিক পারফর্ম্যান্স সত্ত্বেও, নির্বাচকরা তাকে বারবার উপেক্ষা করেছিলেন।
মধ্যপ্রদেশে জন্মগ্রহণকারী এবং এখন কেরালার হয়ে খেলছেন, জলজ সাক্সেনা একজন দুর্দান্ত অলরাউন্ডার। তিনি ১৫০টি প্রথম-শ্রেণীর ম্যাচে ৭,০৬০ রান করেছেন এবং ৪৮৪টি উইকেট নিয়েছেন। ৩৮ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় তার প্রতিভার ভিত্তিতে তিনবার সেরা অলরাউন্ডারের জন্য লালা অমরনাথ পুরস্কার জিতেছেন। জলজ ইন্ডিয়া এ-এর হয়েও খেলেছেন এবং অনেক আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজির অংশ ছিলেন, কিন্তু ২০২১ সালে মাত্র একটি আইপিএল ম্যাচে তিনি পাঞ্জাব কিংসের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন।
জলজ সাক্সেনা ঘরোয়া ক্রিকেটে ব্যাট এবং বল উভয় ক্ষেত্রেই ধারাবাহিকভাবে ভালো পারফর্ম করেছিলেন, তবুও ভারতীয় দলে তার স্থান নিশ্চিত করা যায়নি। তার কঠোর পরিশ্রম এবং ধারাবাহিকতা তাকে ভক্ত এবং ক্রিকেট পণ্ডিতদের মধ্যে সম্মান এনে দিয়েছিল, কিন্তু আন্তর্জাতিক অভিষেকের স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে গেল। আপনার কি মনে হয় জলজের মতো প্রতিভাবান খেলোয়াড়কে জাতীয় দলে সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল?
অমল মজুমদার
ঘরোয়া ক্রিকেট কিংবদন্তি অমল মজুমদার প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ১১,০০০-এরও বেশি রান করেছেন কিন্তু ভারতীয় জাতীয় দলে কখনও জায়গা পাননি। ১৯৯৩-৯৪ রঞ্জি ট্রফি মৌসুমে মুম্বাইয়ের হয়ে হরিয়ানার বিপক্ষে ২৬০ রান করার মাধ্যমে তার ক্যারিয়ারের শুরুটা দুর্দান্ত হয়েছিল। দুর্ভাগ্যবশত, তার সেরা সময় ভারতীয় ব্যাটিংয়ের স্বর্ণযুগের সাথে সাংঘর্ষিক হয়েছিল, যেখানে শচীন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড়, সৌরভ গাঙ্গুলি, বীরেন্দ্র শেবাগ এবং ভিভিএস লক্ষ্মণের মতো কিংবদন্তিরা ছিলেন, যার ফলে জাতীয় দলের ব্যাটিং লাইন-আপে জায়গা পাওয়া তার পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
৪৮.১৩ গড়ে এবং ৩০টি সেঞ্চুরি করে ধারাবাহিকভাবে ভালো পারফর্ম করা সত্ত্বেও, মজুমদার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সুযোগ পাননি। তিনি মুম্বাইকে রঞ্জি খেতাব এনে দিয়েছিলেন এবং পরে আসাম ও অন্ধ্রের হয়ে খেলেছিলেন। খেলা থেকে অবসর নেওয়ার পর, তিনি কোচিংয়ে প্রবেশ করেন এবং ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ এবং অনূর্ধ্ব-২৩ দল, নেদারল্যান্ডস (ব্যাটিং পরামর্শদাতা) এবং রাজস্থান রয়্যালস (আইপিএল ২০১৮-২০২০) এর সাথে কাজ করেন। বর্তমানে, তিনি হরমনপ্রীত কৌরের নেতৃত্বে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের সর্ব-ফরম্যাটের প্রধান কোচ।